বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আরবি পড়াশুনা নিয়ে দীর্ঘদিনের ভালো রকমের অভিজ্ঞতা আছে এমন একজন কয়েক বছর আগে মজা করে বলছিলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের আরবি বিভাগগুলোকে ছোট করে দেখলে চলবে না, এসকল বিভাগের বিশাল অবদান আছে। অন্ততপক্ষে ১২ বছরে শিক্ষার্থীরা যা টুকটাক আরবি শিখে আসে, চার/পাঁচ বছরে সেটা ভুলিয়ে দিতে তো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারছে এসকল বিভাগ! এটা খানিকটা স্যাটায়ারধর্মী মন্তব্য, এবং স্যাটায়ারে মুবালাগা (অতিরঞ্জন) থাকাটাই স্বাভাবিক, কিন্তু ওই মন্তব্যে যে আক্ষেপ ফুট ওঠে, সেটা একেবারে মিথ্যাও নয়।
ব্যক্তিগতভাবে আমি দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রাক্তন মধ্যম সারির শিক্ষার্থী, শিক্ষাজীবন শেষে সেই সনদে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে একটা চাকরিও জুটেছে আল হামদু লিল্লাহ। কিন্তু এতদসত্ত্বেও দুঃখজনক বাস্তবতা হলো আরবি বিভাগের কিংবা (বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের) বিভাগসমূহের যে আউটকাম, সেটা নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলতে পারছি না।
বাংলাদেশের চারটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্সের সুযোগ রয়েছে, এর বাইরে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা ইনস্টিটিউটে আরবি ভাষার উপর কোর্স করার সুযোগ রয়েছে। কয়েকটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েও আরবি পড়ানো হচ্ছে, কিন্তু আমার অজ্ঞতার কারণে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে আজকের আলোচনায় নিয়ে আসা সম্ভব হচ্ছে না। আর হ্যাঁ, চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেও বিভিন্ন মাদরাসায় আরবি অনার্স/মাস্টার্সে আছে। তবে আপাতত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় তথা ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কথাই আলোচনা করবো। যদিও বেশির ভাগ তথ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিকই হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
যতদূর জানি (যদি অতিসাম্প্রতিক কোন পরিবর্তন না হয়ে থাকে) এই চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কেবল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ আারবি মাধ্যমে পড়ানো হয়ে থাকে বলে দাবি করা হয়। বাকি তিনটি মূলত বাংলা মাধ্যম, তবে কিছু প্রশ্নের উত্তর আরবিতে লেখার বাধ্যবাধকতা থাকে। আবার অন্যদিকে কেবল (সম্ভবত) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রথম দুই বছর সাহিত্য না পড়িয়ে বিগিনার লেভেলের ভাষা কোর্স করানো হয়, অন্য তিনটিতে প্রথম বর্ষ থেকেই প্রাচীন সাহিত্যের পাঠ শুরু হয়।
আমার সময়ের (এক দুই ইয়ার সিনিয়র-জুনিয়রসহ) চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি শিক্ষার্থীদের সাথেই কমবেশ পরিচয় হলেও আমি খুব একটা উল্লেখযোগ্য তফাত খোঁজে পাইনি আামাদের মধ্যে, যদিও একদিক বিবেচনায় কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও আরেক দিক বিবেচনায় ঢাকা ব্শ্বিবিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের আরবি ভাষার উপর অন্যদের তুলনায় অধিক দক্ষ হওয়ার কথা ছিল।
ঢাকা ছাড়া অন্য তিনটি বিশ্ববিদ্যলয়ের স্যাম্পল আমার নিকট যদিও খুই কম, তবু এর ভিত্তিতেও মোটামুটি এতোটুকু বলতে পারি যে, সর্বত্রই কিছু সংখ্যক আরবিতে দক্ষ এবং বিপুল সংখ্যক (স্নাতক/স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী বিবেচনায়) আরবি না জানা শিক্ষার্থী রয়েছেন। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি মাধ্যম হওয়া সত্ত্বেও এমন পরিস্থিতি কেন, সেটা বলা আমার জন্য সম্ভব নয়, যেহেতু আমি সেখানকার পাঠ্যকার্যক্রম সম্পর্কে বিশদ জানি না। ফলে এখন থেকে আমার কথাগুলো মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ ভিত্তিকই হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগে চমৎকার আরবি জানা শিক্ষার্থী প্রতিটা ব্যাচেই আছেন। তারা যে চমৎকার আরবি জানেন, সেটা রীতিমত প্রমাণিত ও তর্কাতীত বিষয়। আমার ব্যাচের দুই জন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী থাকাকালে বিভাগীয় পর্যায়ে বিতর্ক করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে দ্বিতীয় বর্ষে কাতারে আরবি বিতর্কে চমৎকার পার্ফরম্যান্স করেছিল, একজন কিছু বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বক্তাও হতে পেরেছিল কাতারে। কাতার ডিবেট আয়োজিত আরবি বিতর্কে শ্রেষ্ঠ বক্তা হওয়ার বিষয়টিই তার আন্তর্জাতিক মানের আরবি জানাাকে প্রমাণের জন্য যথেষ্ট বলে মনে করি। এদের সংখ্যা সাধারণত খুব বেশি নয় বটে, তবে এর বাইরে আমার মতো আরো কয়েক জন হয়তো ওই পর্যায়ের আরবি না জানলেও মোটামুটি কাজ চালানোর মতো আরবি জানি। আরবির সনদ দেখিয়ে কোন কাজে যোগদান করলে মোটামুটি কাজ চালিয়ে পেট চালাতে পারবো আরকি। কিন্তু বাকি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থীর অবস্থা এমন যে, তারা হয়তো কোথাও আরবির গ্র্যাজুয়েট হিসেবে যোগদান করলে অনেকক্ষেত্রে লজ্জায়ও পড়তে হতে পারে আরবি ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞতার কারণে।
একটি বিভাগের একশত জন শিক্ষার্থীর মধ্যে একশত জনই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দক্ষ হবে না- এই যুক্তিতে এই পরিস্থিতিকে হয়তো খানিকটা জাস্টিফাই করা যেত, কিন্তু মুশকিল হলো অন্য জায়গায়। এই যে যাদের প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের আরবি ভাষা দক্ষতা রয়েছে বললাম, এদের প্রায় শতভাগই প্রথম বারো বছরের মাদ্রাসা জীবনে তাদের ব্যাসিক আরবি দক্ষতাটুকু অর্জন করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এসে যেহেতু নিজেদের সামনে আরবি ভিন্ন অন্য কোন পথে পরিচালিত করতে চাচ্ছিলেন না, তাই সচেতনভাবে প্রথমে বর্ণিত মন্তব্য অনুসারে আরবি ভাষা ভুলে যাওয়া থেকে নিজেকে হেফাজত করেছেন। কিন্তু যারা মাদরাসা থেকে এসেছেন “আরবি বুঝি না” এই বলে, তাদের প্রায় শতভাগ্ই আরবি না বুঝেই অনার্স-মাস্টার্স পার করে ফেলেছেন, উপরন্তু মাদরাসা থেকে মোটামুটি আরবি শিখে এসেও অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সফলতার সাথে আরবি ভুলতে সক্ষম হয়েছেন। আমার প্রশ্নটা এই জায়গায়, আরবিতে অনার্স-মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় একজন শিক্ষার্থী কেন আরবি ভুলতে সক্ষম হবে, বা আরবি না শিখে পার হয়ে যাওয়া সম্ভব হবে তার জন্যে?
এতোটুকু পড়ে অনেকের মনে হতে পারে, কেন বেশির ভাগ শিক্ষার্থী মাদরাসায় পড়েও আরবি পারবে না? এর উত্তরে শুধু এতোটুকু বলা যেতে পারে, বাংলাদেশের মাদরাসাসমূহ মোটামুটি বাংলা মিডিয়াম স্কুলগুলোর সাথে তূলনীয়। বাংলা মিডিয়াম থেকে যেমন ইংরেজিতে “আই এম জিপিএ ফাইভ” রয়েছে, ঠিক একই পর্যায়ের আরবি জানা মাদরাসা শিক্ষার্থী মাদরাসায়ও রয়েছে। এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজি দক্ষতা যাচাই করার সুযোগ পেলেও আরবি বিভাগ সে সুযোগ পায় না। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ ফাইভ পেয়ে যারা ঢাবির ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজিতে ফেইল করে, তাদেরকে সহজেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না করার সুযোগ থাকলেও ভর্তি পরীক্ষায় আরবি থাকলে যারা আরবিতে ফেইল করতো, তাদেরকে তো চেনারই সুযোগ থাকছে না।
যাই হোক, তাত্ত্বিকভাবে ঢাবির আরবী বিভাগের সিলেবাস এমনভাবে সাজানো হয়েছে যেন একেবারে আরবিতে অদক্ষরাও আরবি ভাষা শিখতে সক্ষম হয়। এই জন্য অন্তত দুই বছরে চারটি সেমিস্টার ব্যয় করা হয়। কিন্তু এই চারটি সেমিস্টার আদৌ কতটুকু কার্যকর?
এই প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর থাকা উচিত হলেও আমার জানা মতে তা নেই। তবে ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের জায়গা থেকে যদি বলি, প্রথম সেমিস্টারের শুরুর দিকে আমার যে সহপাঠীদেরকে যে অবস্থা ছিল, প্রথম চার সেমিস্টারের বেসিক কোর্সগুলোর পর “এসকল কোর্সের প্রভাবে” তাদের অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন খুব একটা দেখা যায় না।
একটু আগে কাতার ডিবেটে অংশগ্রহণকারী যে দুইজনের কথা বললাম, ওই চার সেমিস্টারের কোর্স আসলে তাদের জন্য বা তাদের অনুরূপদের জন্য জরুরিই ছিল না, যাদের জন্য মূলত ওই চার সেমিস্টারের কোর্স ডিজাইন করা হয়েছিল, তাদের প্রায় কারোরই এসকল কোর্সের পর কোন ইতিবাচক পরিবর্তন হয় না। এইটা একটু সাধারণীকৃত বিশাল দাবি হয়ে যায়, এবং এইটা প্রমাণের জন্য আসলে যেরকম উপাত্ত থাকা দরকার তা আমার হাতে নেই। আমি এই দাবি করছি মূলত আমার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির স্বাভাবিক পর্যবেক্ষণের আলোকে, কারণ এই দাবি প্রমাণের জন্য যে ধরনের গবেষণা পরিচালনা করা দরকার, তা করার সুযোগ আমার নেই।
আপাতত উপরের হাইপোথিসিসের উপর ভিত্তি করে যদি কথা এগিয়ে নিয়ে যাই, তাহলে প্রশ্ন উঠতে পাারে চার-চারটি সেমিস্টারে আরবি ভাষার ব্যাসিক শেখানোর পরও কেন আরবী বিভাগের শিক্ষার্থীদের বেশির ভাগের কেন এই কোর্সগুলো কাজে আসে না? কারো মনে হয় এই কোর্সগুলো তো দরকারই নাই, সবই জানি; আবার যাদের আসলেই দরকার তারাও উপকৃত হচ্ছেন না। কিন্তু কেন?
সাধারণত ভাষা শিক্ষা দুই ভাবে হয়ে থাকে। হয়তো ইনার মোটিভেশনের ভিত্তিতে নিজের প্রচেষ্টায় শিখতে হয়, নয়তো বিপদে পড়ে শিখে। বিপদে পড়ে শেখার সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হতে পারে বাংলাদেশের শ্রমিকরা আরব দেশে গিয়ে যেভাবে আরবি শিখে। তারা কিন্তু দুই বছরের মধ্যে স্থানীয় কথ্য আরবি শিখে ফেলে, কারণ তা না শিখে তাদের পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যারা আরবি পড়তে ভর্তি হয়, তাদের একটা অংশ তো ব্যাসিক আরবি জানেই, কিন্তু যারা ব্যাসিক আরবি না জেনে আরবি বিভাগে ভর্তি হচ্ছে, তারা কিন্তু নিজেদের ইনার মোটিভেশন থেকে আরবি শেখার জন্য প্রচেষ্টা না করে তারা বরং অন্যান্য দিকে মনযোগ দেয়, নয়তো (আমার মতো) নিছক ফাও সময় কাটায়, কোন কিছুতেই ফোকাস করে না। ফলে এদেরকে আরবি শেখাতে হলে বিপদে ফেলে শিখাতে হবে।
এবার মুশকিল হলো, শিক্ষার্থীকে আরবি শিখতে বাধ্য করতে হলে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে, যাতে ব্যাসিক কোর্সসমূহে যেটুকু ভাষা শেখানোর দাবি করা হয় কাগজে-কলমে, তার অন্তত ষাট-পয়ষট্টি ভাগ না শিখলে যেন এসব কোর্সে পার না পাওয়া যায়। কিন্তু আমাদের বাস্তবতা আসলে একেবারে ভিন্ন। এসব কোর্সে ভাষা না শিখেই বিভিন্ন কায়দায় সত্তুর/আশি ভাগ নাম্বার পাওয়া একাবের জলবৎ তরলং। আপনি দুনিয়ার যত মেথড সম্পর্কেই জানুন না কেন, আর নিজে যত পারদর্শীই হোন না কেন, আপনার শিক্ষার্থী যদি ভাষা না শিখে পরীক্ষায় পার পেয়ে যায়, তাহলে সে কেন হুদাই ভাষা শিখতে পরিশ্রম করবে? গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পূর্বাবধি তো তার মূল লক্ষ্য থাকে সার্টিফিকেট, গ্র্যাজুয়েশন শেষে হয়তো মনে হয়, আহা কিছুটা ভাষা শিখতে পারলে ভালোই হতো, কিন্তু ততো দিনে চাকরির বাজারের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে আরবি ভাষা শিক্ষার অধ্যায় সমাপ্ত করতে বাধ্য হয়।
সোজা বাংলায়, ভাষা না শিখে আরবী বিভাগ থেকে পাশ করা যাবে না, এমন পরিস্থিতি তৈরি না করতে পারলে শিক্ষার্থীরা ভাষা শিখবে না, এটাই স্বাভাবিক। এখানে মনে হতে পারে যে, এমন পরিস্থিতিতে তো প্রচুর শিক্ষার্থী ড্রপ আউট হয়ে যেতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তা হওয়ার কথা না। মধ্যপ্রাচ্যের গৃহপরিচারিকারা যদি অন্তত ভাষার কারণে চাকিরচ্যূত না হয়ে (অন্য অনেক অসুবিধায় পড়লেও) বরং প্রয়োজনীয় ভাষা দক্ষতা অর্জন করে ফেলতে সক্ষম হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে যেসকল শিক্ষার্থী একটা পর্যায়ের মেধার প্রমাণ দিয়ে ভর্তি হয়েছে, তারা বিপদে পড়লে চার বছরে একটি ভাষা আয়ত্ত করতে পারবে না, এমনটা হওয়ার কোন কারণ নেই।
সে যাই হোক, আমি যে দাবি করলাম এখানে; সেটা তো ভুলও হতে পারে। কিন্তু এই ঠিক-ভুল নির্ণয় করা সংশ্লিষ্টদের জন্য খুব কঠিন না। মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকে যেমন কোন কিছু না শিখেই উত্তীর্ণ হওয়া যায়, সেমিস্টার ফাইনালসমূহও প্রায় একই রকম হয়ে যাচ্ছে। কাজেই সেমিস্টার ফাইনালের বাইরে যদি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের কয়েকটি ব্যাচের একদম শুরুর দিকে একবার, দ্বিতীয় বর্ষ শেষে একবার এবং চতুর্থ বর্ষ শেষে আরেক বার যথাযথ ল্যাঙ্গুয়েজ প্রফিসিয়েন্সি টেস্টের মাধ্যমে যাচাই করা সম্ভব হয় যে তাদের মধ্যে যারা একেবারেই ব্যাসিক আরবি প্রথম দিকে পারতো না, তাদের কতটুকু উন্নতি হয়েছে বিভাগের কোর্সগুলোর মাধ্যমে, তাহলে হয়তো প্রকৃত পরিস্থিতি নির্ণয় করা যাবে সহজেই।
আরবি ভাষার আন্তর্জাতিক কদর নিয়ে আমাদের বিভাগসমূহের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই বেশ সচেতন। কিন্তু ভাষা না শিখে সেই বাজারে প্রবেশ করার চেষ্টা করলে আসলে হীতে বিপরীত হতে পারে। সে জায়গা থেকে এই নিবন্ধে আলোচ্য বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা করার হয়তো সুযোগ রয়েছে।
আমার জায়গা থেকে হয়তো এই নিবন্ধের আলোচনাগুলো খানিকটা অনধিকার চর্চার মতোই, কিছুটা শিষ্টাচার বহির্ভূতও বটে। কারণ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রসমূহে যথেষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞগণ রয়েছেন। সে জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। এবং যারা এই লম্বা প্যাচাল পড়েছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।